উন্নয়ন শোধন: উন্নয়ন যেভাবে দেশটাকে স্ক্রু করেছে
আলোচনাটা পুরতন, কিন্তু তথ্যটা নতুন।
দিন কয়েক আগে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের সাথে ফয়েজ তৈয়্যব ভাইয়ের ওয়েবিনারে, প্রফেসর তামিম চমৎকার একটি তথ্য দিয়েছেন যা আমার জানা ছিল না।
উনি বললেন যে, বিগত দশকের বিদ্যুতের প্লানিং গুলোর সময়ে ধরে নেওয়া হয়েছিল ২০৩০ এ ২০ বিলিয়ন ডলার প্রাইমারি এনার্জি আমদানি করতে হবে।
অর্থাৎ ধরে নেওয়া হয়েছিল, বাংলাদেশ ২০ বিলিয়ন ডলার প্রাইমারি এনার্জি বিদেশ থেকে আমদানি করার মত অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন করবে।
এইটা একটা স্টানিং তথ্য।
কারণ আমরা এতো দিন ধরে যা বলে আসতেছি যে, উন্নয়নই আপনাকে স্ক্রু করেছে, এই তথ্যটার ভেতরে তার প্রমাণ আছে।
২০১০ সালে জাপানিরা যখন প্রথম পাওয়ার সেক্টর মাস্টারপ্ল্যান করে এবং ২০১৬ তে যখন নতুন পিএসএমপি করা হয়, আমরা সেইটার সমালোচনা করেছিলাম এই বলে যে, জিডিপির এই প্রক্ষেপন অর্জিত হবে না। ফলে, জিডিপির এই প্রক্ষেপন দেখিয়ে ওভার ক্যাপাসিটি তৈরি করা হবে।
ইন্টেরেস্টিংলি, জিডিপি প্রক্ষেপনের ধারে কাছেই রয়েছে কিন্তু প্রক্ষেপন অনুসারে বিদ্যুতের ব্যবহারও বৃদ্ধি পায় নাই আবার একই সাথে জিডিপির প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে যে ম্যাক্রোইকনমিক স্টাবিলিটি অর্জন হওয়ার কথা বা বৈদেশিক রিজার্ভ বা সরকারের রেভেনিউ অর্জিত হওয়ার কথা, সেই গুলো হয় নাই।
ফলে, উন্নয়নের মুলা দেখিয়ে ঠিকই ৩০ বিলিয়ন ডিলার বিনিয়োগ হয়েছে, কিন্তু বিদ্যুৎ খাত থেকে যে আয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা আসে নাই । বরং আল্লাহ আমাদের বাঁচায় দিয়েছে যে, লক্ষ্য অনুসারে বিদ্যুতের ব্যবহার বৃদ্ধি পায় নাই। কারন, যদি বিদ্যুতের ব্যবহারের যে টারগেট করা হয়েছিল, সেই পরিমান ব্যবহার বৃদ্ধি পেত, তবে শুধু মাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাইমারি এনার্জির সাপ্লাই মেটাতে গিয়েই বাংলাদেশ দেউলিয়া হয়ে যেত।
এইটাই উন্নয়নের শোধন। এতো বছর ধরে যে উন্নয়ন দেখাতে জিডিপির হার বাড়িয়ে দেখানো হয়ে গিয়েছে তা শুধু প্রপাগান্ডা নয়। বরং এই উন্নয়ন দেখিয়ে এই ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের জাস্টিফিকেশান দেওয়া হয়েছে, এক্সেস ক্যাপাসিটি তৈরি হয়েছে, যা আগামী বছর গুলোতে আরো খারাপ জায়গায় যাবে।
এইটাই বেসিকালি উন্নয়ন শোধন। জিডিপির কারসাজিকে
আপনার মনে হতে পারে, নিরীহ প্রপান্ডা, তাতে কি যায় আসে।
কিন্তু, হিসেবটা এতো সরল নয়।
এই উন্নয়নের কাল্পনিক ডাটাই আপনার জীবনে একটা বড় ক্রাইসিস হিসেবে নেমে এসেছে।