জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের বেনেফিট আমরা পাইনি কেন ও খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি প্রতিষ্ঠার পরামর্শটি কেন গ্রহনযোগ্য নয়
খেলাপি ঋণ উদ্ধারে এএমএল নয়, বরং দরকার সুইস রেগুলেটরদের মত শটগান ম্যারিয়েজ
সালাম জিয়া হাসান বলছি,
আদানি সিরিজের সমাপ্তির পর আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে ইন্টেরেস্টিং আলোচনা গুলো এখন শুরু করতে পারছি।
আমার অত্যন্ত প্রিয় একজন অর্থনীতিবিদ নোয়া স্মিথ, ভারত, বাংলাদেশ সহ বেশ কিছু উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতি রিভিউ করেছিলেন। যদিও আমার মতে, নোয়ার বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্লেষণ খুব অগভীর ছিল কিন্তু সামগ্রিক সিরিজটি চমৎকার। এই সিরিজে নোয়া উল্লেখ করেছিলেন, তার প্রিয় অর্থনীতির বই হলো জো স্টাডওয়েলের হাউ এশিয়া ওয়ার্কস। আমি বইটি পড়িনি কিন্তু, নোয়া হাউ এশিয়া ওয়ারক্সের সামারি করেছিলেন, তিন টি বিষয় থেকে।
১। ভুমি সংস্কার - বড় ভুমির মালিকদের ভুমি জোর করে ক্ষুদ্র চাষিদের বন্টন।
২। ইম্পোরট সাবস্টিটিউশনের বদলে রপ্তানির মুখী অর্থনীতিতে জোর দেওয়া।
৩। ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট- রিয়াল এস্টেট বা অন্যান্য বাবল সেক্টর গুলোর বদলে রপ্তানি মুখী শিল্পে স্ট্রাটেজিক ঋণ প্রদানের মাধ্যমে শিল্পায়ন করা।
আগামী কয়েক দিন , আমি ইম্পোরট সাবস্টটিউশান ও রপ্তানি মুখী শিল্প নিয়ে যে অর্থনীতিতে একটি বিতর্ক রয়েছে এবং বাংলাদেশ কিভাবে রপ্তানি মুখী শিল্পের ভেক ধরে মুলত ইম্পোরট সাবস্টিটুশান ইন্ডাস্ট্রি কেন্দ্রিক পলিসি নিয়েছে এবং এর মাধ্যমে কিভাবে বাংলাদেশের গ্রিন ফিল্ড ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট উন্নয়নশীল দেশ গুলোর মধ্যে তৃতীয় সর্ব নিম্ন স্থানে পৌঁছেছে, এই নিয়ে একটি সিরিজ আলোচনা করবো।
জমিদার প্রথা উচ্ছেদের-সুবিধা আমরা নিতে পারিনি
কিন্তু, আজ আমি অনালোচিত একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাই, তা হচ্ছে, বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে এবং অল্প হোক বেশী হোক যাই অর্জিত হয়েছে, সেই অর্জনে ১৯৫২ সালে জমিদার প্রথা উচ্ছেদে ভুমি সংস্কার আইনের ভুমিকা। এই সংস্কারটি পাকিস্তান করতে পারে নাই বলেই পাকিস্তানের এলিটেরা তাদের রাষ্ট্রের কন্ট্রোল নিতে পেরেছে। কিন্তু, বাংলাদেশে বিষয়টা ভিন্ন রকম।
আমার আলোচনার প্রেক্ষাপট টা নোয়া স্মিথের বক্তব্যটাই। নোয়া- কোরিয়া ও তাইওয়ান সহ বিবিধ দেশের উদাহরণ দেখিয়েছেন যে, প্রাক উপনিবেশিক প্রায় সকল রাষ্ট্রেই কোন না ধরনের ভুমি সংস্কার হয়েছে।
১৯৫২-৫৬ সালে বাংলাদেশে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের মাধ্যমে নোয়া উন্নয়নের যে পূর্বশর্ত গুলো চিহ্নিত করেছেন, তার প্রথমটি সম্পন্ন হয়।
এর পূর্বে ১৭৯৩ সালের বঙ্গীয় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবিধান ও বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন, ১৮৮৫ এর মাধ্যমে ব্রিটিশরা বাংলাদেশে অভিজাত জমিদার শ্রেণীর জন্ম দেয়। এই আইনের অধীনে জমিদাররা ভূমির মালিক হিসেবে বন্দোবস্ত পায় এবং তারা ব্রিটিশদেরকে নির্ধারিত পরিমান খাজনা প্রদানের মাধ্যমে তারা তাদের অধীনে ক্ষুদ্র বন্দোবস্তধারীদের কাছ ইচ্ছে মত খাজনা আদায় করতে পারতো ।
বাংলাপিডিয়ার (এখনো বাংলাদেশের বিভিন্ন তথ্যের জন্যে অসাধারন সোর্স) তথ্য অনুসারে, ১৯৩৮ সালে স্যার ফ্রান্সিস ফ্লাউডের সভাপতিত্বে এক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ভূমিসংস্কার কমিশন গঠিত হয় যার লক্ষ্য ছিল, "প্রকৃত জমি-চাষিকে সরাসরি সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত করা"।
ভূমি রাজস্ব কমিশনের সুপারিশ অনুসারে ১৯৪৭ সালে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন উত্থাপিত হয় এবং এই সুপারিশ গুলো অনুসারে ১৯৪৮ সালে দেশ বিভাগের পর পূর্ববঙ্গ জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব বিল প্রণয়ন করা হয়, যা ১৯৪৮ সালের মুসলিম লিগ সরকার যা এগিয়ে নেয়। এবং এই আইনের ধারায় ১৯৫১ সালে বিলটি পাশের মাধ্যমে জমিদার প্রথা রদ হয়।
"এই আইনের আওতায় সরকার দেশের একমাত্র জমিদারে পরিণত হয় এবং সরকার পর্যায়ক্রমে জমিতে সকল খাজনা-আদায়ি স্বার্থ অধিগ্রহণ করে। জমির সকল মালিক সরকারের প্রত্যক্ষ প্রজায় পরিণত হয়।" জমিদারের পরিবার প্রতি সর্বোচ্চ ১৩.৪৮ হেক্টর জমির অধিকার রেখে, বাকিটা সরকার অধিগ্রহন করে।
শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতেও জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত করা হয়। উইকিপিডিয়াতে উল্লেখিত রয়েছে যে, ভারতের "জমিদাররা ও রাজারা বংশগত শৈলী, উপাধি, পদ এবং সম্মানের কিছু বিশেষ অধিকারের নিশ্চয়তা পেয়েছে এবং একই সাথে তাদের নিজের ও পরিবারের জীবন যাত্রার ব্যয় ভারের জন্য “প্রাইভি পার্স” পায় "- যা ১৯৭১ এ বাতিল করা হয় ।
কিন্তু, "আধুুনিক পাকিস্তানে এটি আর সংশোধন হয়নি যার ফলে পাকিস্তানের রাজনীতি এবং সরকারে সামন্তপ্রথা একটা বিরাট প্রভাব বিস্তার করছে"।
পাকিস্তান ও বাংলাদেশের এলিটদের রুপ ভিন্ন
ফলে, পাকিস্তানে প্রথাগত অভিজাত ও সামন্ততন্ত্র যেভাবে বিস্তার লাভ করেছে বাংলাদেশে সেভাবে বিস্তার লাভ করেনি। বাংলাদেশের নিউ এলিটেরা মুলত ৭১ এর পূর্বে ও পরে সৃষ্টি হয়েছে। ৭৫ এর পর এন্ট্রিপ্রেনারদের হাতে ধরেও বাংলাদেশে একটি নতুন এলিট শ্রেণী সৃষ্টি হয়েছে- যে এন্ট্রিপ্রেনিয়াল এলিটদের মধ্যে আবার সামরিক , বেসামরিক আমলা ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর শিক্ষিত ও উদ্যমী অংশ ডোমিনেট করে ।
ফাইনালি শেখ হাসিনার সরকার ২০০৮ এর পর ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার লুট এবং বিদ্যুৎ খাতের লুটের সুযোগ দিয়ে আরেকটি নতুন অভিজাত শ্রেণী সৃষ্টি করেছেন। এবং ২০১৪ এর পরবর্তীতে বাংলাদেশের এসএমই ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংস করে, ১০০টি পরিবারকেন্দ্রিক গ্রুপের হাতে ৭০% প্রডাকশন ক্যাপাসিটি ট্রান্সফার করে পুরাতন এলিটদের মধ্যে বিশেষ একটি অভিজাতরা সুপার এলিট হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
উন্নয়ন অর্থনীতির লিটারেচারে ক্রমাগতই এলিটদের প্রকৃতি, ইন্সেটিভ, তাদের সম্পদের সোর্স রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়ন প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
যাক সে ভিন্ন আলোচনা কিন্তু, আমি নোয়া স্মিথ ও জো স্টাডওয়েলের হাউ এশিয়া ওয়ারক্স এর হিসেবে উন্নয়নের তিনটি মুলনীতির একটি দিক হিসেবে ৫১ এর জমিদার প্রথা রদের এই বিষয়টি চিহ্নিত করতে চাই এই জন্যে যে, আমাদের যেন এই সচেতনতা আসে যে, বাংলাদেশে তিনটি কন্ডিশনের একটি কন্ডিশান খুব ভালো মতই পূর্ণ করেছিল। অর্থাৎ,সঠিক পলিসি নিলে বাংলাদেশের আরো বড় পরিমান উন্নয়ন সম্ভব ছিল। বাংলাদেশ কোরিয়া, টাইওয়ান ও মালেয়শিয়ার মত লেভেলে পৌঁছাতে পারতো ।
কারন, রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের পর পর আলাদা করে বড় একটি এলিট গ্রুপ না থাকাতে , এই রাষ্ট্রে অর্থনৈতিক উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা কৃৎ কম ছিল।
দ্বিতীয় শর্তটি হচ্ছে, ইম্পোরট সাবস্টিটিউশান ও রপ্তানি মুখী শিল্পের ইস্যু। এই নিয়ে আমি আগামী কিছু দিন দীর্ঘ আলোচনা করবো ইনশাল্লাহ।
আমার দ্বিতীয় পয়েন্ট ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের সমস্যা দূর করতে এসেট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান তৈরির বিষয়ে।
সকল খেলাপি ঋণ এসেট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানে ট্রান্সফার করে, সরকারের সেই ঋণের মালিকানা নেওয়ার চিন্তাটা বোকামি
২। সম্প্রতি একটি আলোচনায় বিআইডিএসের মহাপরিচালক ডক্টর বিনায়ক সেন মন্তব্য করেছেন ,
”খেলাপি ঋণকে আগামী অর্থ বছর ইকুইটিতে রুপান্তর করে, সরকার এই গুলোর মালিকানা নিয়ে নিতে পারে”।
বিআইডিএস বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গবেষণার প্রধান সংস্থা। ফলে বিআইডিসের পরিচালকের চিন্তা আমি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। এবং ডক্টর বিনায়কের এই মন্তব্যটি নিয়ে আপত্তি জানায় রাখলাম।
বিশ্বের কিছু কিছু দেশে ব্যাংকিং সেক্টরকে পুনরুদ্ধারের জন্যে , ডিস্ট্রেসড এসেট গুলোকে আলাদা করে এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি তৈরি করে তাদের হাতে সেই এসেট গুলো ট্রান্সফারের উদাহরণ রয়েছে। এশিয়ান ফিনান্সিয়াল ক্রাইসিসের পর বিভিন্ন দেশে ডিস্ট্রেসড এসেট গুলো এসেট ম্যাঞ্জেমেন্ট কম্পানির হাতে ট্রান্সফারের উদাহরণ রয়েছে। যেমন কোরিয়াতে কোরিয়া এসেট ম্যানেজেমেন্ট করপোরেশান, ইন্দোনেসিয়াতে ইনদোনেসিয়ান ব্যাংক রিস্ট্রাকচারিং এজেন্সি , মালেয়শিয়াতে (ডানামোডাল -ব্যাংক রিস্ট্রাকচারিং এন্ড ব্যাংক রিক্যাপিটালাইজেশান এজেন্সি) সৃষ্টি করা হয়। এই এজেন্সি গুলোর হাতে ডিস্ট্রেড এসেট ট্রান্সফার করা হয় এবং সরকার অনেক ক্ষেত্রেই এসেট ট্রান্সফারের পর ব্যাংক গুলোকে রিক্যাপিটালাইজ করে।
কিন্তু, আমার ও আমার কিছু অর্থনীতিবিদ বন্ধুদের মতামত হচ্ছে, বাংলাদেশের জন্যে এই মডেলটি ক্ষতিকর এবং ব্যাংকিং খাতের পাওয়ার স্ট্রাকচার সংস্কার না করে আইএমএফের বুদ্ধিতে করা ট্রাডিশনাল এএমসি খেলাপি ঋণের পরিমান বৃদ্ধি করবে মাত্র ।
কারন, বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের বড় একটা অংশ ইচ্ছাকৃত ভাবে তৈরি ঋণ, বিজনেস ফেইলরের কারনে তৈরি মন্দ ঋণ নয় । বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের প্রধান ইস্যু হচ্ছে, ক্ষমতার ইম্ব্যালেন্স। এখানে আইনের মাধ্যমে অল্প কিছু পরিবারের হাতে ব্যাংকের কন্ট্রোল হস্তান্তর করা হয়েছে, যেখানে ব্যাংক গুলোর মুল মালিক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারিরা। এই পরিবার গুলো এবং তাদের ভাই ব্রাদারেরা একে অন্যের ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন। দেশের ব্যঙ্কিং সেক্টরের ১৭ লক্ষ কোটি টাকা এসেটের মধ্যে, ৪ লক্ষ কোটি টাকাই এই ধরনের ঋণ। (স্মৃতি থেকে বলছি, কিছু ভুল হতে পারে)। একই সাথে রয়েছে, রাজনৈতিক কারনে আওয়ামী লীগের ভাই ব্রাদারদের কাছে দেওয়া ঋণ।
ফলে, যদি ক্ষমতার এই ইম্ব্যালেন্সটা দূর না করা হয়, তবে এই এসেট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানটির হাতে খেলাপি ঋণ গুলো ট্রান্সফারের পর , এই ব্যাংক মালিকেরা আরেক দফা ঋণ নেবে যে ঋণ গুলো আবার খেলাপি হবে ।
ফলে, ব্যাংকিং সেক্টরের এই মাফিয়া এলিট খমতায়নের মুল সমস্যাটা সমাধান না করে এসেট ম্যানেজমেন্ট কম্পানির মাধ্যমে ডিস্ট্রেসড এসেট ট্রান্সফার করলে, দুই বছরের মধ্যে খেলাপি ঋণ দ্বিগুণ হবে।
প্রথমটি হচ্ছে, পূর্বের ঋণ, যা তারা জিবনেই পেমেন্ট করবে না । দ্বিতীয়টা ব্ল্যাঙ্ক চেক পাওয়ার পর আরেক দফা ঋণ, যেই গুলোও খেলাপি হবে।
এর ফলে দুষ্কৃতিকারিদের খেলাপি ঋণের দায় টাও দেশের ট্যাক্স পেয়ারদের উপরে চাপবে এবং একই সাথে খেলাপিরা আবার পুরস্কৃত হবে।
এইটা একটা প্রথম শ্রেণীর নির্বুদ্ধিতা, টু পুট ইট মাইল্ডলি। রেস্পেক্টেবল মানুষ জন না হইলে, আমি আরো খারাপ শব্দ ব্যবহার করতাম।
যে কোন সুস্থ মাথার নীতি নির্ধারকদের যেটা করা উচিত
আমার মতে, যে কোন সুস্থ মাথার নীতি নির্ধারকের যেটা করা উচিত তা হলো , সুইজারল্যান্ডের ক্রেডিট সুইসকে সুইস সরকার যেভাবে ইউবিএসের সাথে মাথায় বন্দুক ধরে শট গান ম্যারিয়জে করিয়েছে-এই রকম শট গান ম্যারেজ। ক্রেডিট সুইসের, টিয়ার ওয়ান বন্ড হোল্ডারদের ১৮ বিলিয়ন বন্ড, সুইস রেগুলেটার সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে, কিছু প্রাব্লিক সাপোর্ট গ্যারেন্টি দিয়ে, ক্রেডিট সুইসকে ইউবিএসের সাথে মারজ করিয়েছে।
আমার মতে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এই ধরনের কোন একটি সিস্টেম বের করা উচিত যার মাধ্যমে সিস্টেমেটিক ভাবে দুর্নীতি গ্রস্ত ও স্বাভাবিক ব্যাংক গুলোকে আলাদা করে, খারাপ ব্যাংক গুলোর পরিষদকে পানিশমেন্ট দিয়ে, তাদের এসেট কনফিস্কেট করে সেই এসেট দিয়ে মন্দ ঋণ রিকাভারি করিয়ে- খারাপ ব্যাংক গুলোকে ভালো ব্যাংকের সাথে শট গান ম্যারিয়েজ করাতে হবে ।
পদ্মা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ও আরো কিছু সিস্টেমেটিক ভাবে ডাকাতির উদ্দেশ্যে পরিচালিত ব্যাংক গুলোর পরিচালনা পরিষদ সম্পূর্ণ রিস্ট্রাকচার করতে হবে। এবং এই ব্যাংক গুলোর পালিত সিস্টেমেটিক খেলাপিদের এসেট (ব্যাংকিং ও নন ব্যাংকিং ) এসেট সম্পূর্ণ ভাবে কনফিস্কেট করে, সেইটা কোন এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছে ট্রান্সফার করতে হবে। । তারপরে সেই এসেট থেকে খেলাপি ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এবং শুধু মাত্র এই ব্যাংক গুলোর খেলাপি ঋণ এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছে ট্রান্সফার করতে হবে। একই কাজটি করতে হবে, সরকারি ব্যাংকের সিস্টেমেতিক ডিফল্টারদের এসেটকেও।
ফলে এই সকল ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আলাদা হয়ে গেলে, সার্বিক বাঙ্কিং সেক্টরে খেলাপি ঋণ কমে আসবে। কারন, বাংলাদেশের অনেক গুলো ব্যাংক যথেষ্ট প্রফেশনালি পরিচালিত। এই ব্যাংক গুলোর খেলাপি ঋণ আশংকা জনক নয়।
ফলে এদের যে খেলাপি ঋণ আছে, যা বিজনেস ফেইলরের কারনে তৈরি হয়েছে সেই গুলো নিয়মিত প্রক্রিয়ায় রিকাভারি করতে হবে।
একই সাথে এই ক্রিমিনাল উদ্দেেশ্য পরিচালিত ব্যাংক গুলোকে, ভালো ব্যাংকের সাথে মারজ করিয়ে দিতে হবে, সুইস রেগুলেটরদের পদ্ধতি অনুসরন করে। যার ফলে এই ব্যাংক গুলোও টিকে থাকবে।
অর্থাত , মন্দ ঋণের মধ্যে ক্রিমিনাল মন্দ ঋণ ও বিজনেস ফেইলর মন্দ ঋণ, খারাপ ব্যাংক ও ভাল ব্যাংক আলাদা করতে হবে এবং তাদের আলাদা ভাবে ট্রিট করা হবে । রাশিয়ান অলিগারকদের পশ্চিম যেভাবে ট্রিট করেছে, এই ধরনের কোন একটি ম্যাকানিজম ডিভাইজ করতে হবে।
খুব চরমপন্থি বা সম্পূর্ণ নন প্রফেশনাল মনে হলেও, আপনি যদি সুইস ব্যাংক কিভাবে ক্রেডিট সুইসের টিয়ার অয়ান বন্ড হোল্ডারদের পানিশ্মেন্ট করেছে, তাহলে দেখবেন, প্রিন্সিপাল সিমিলার। ফলে এইটা খুব একটা আনপ্রফেশনাল কিছু নয়। মারকিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ রাশিয়ান অলিগারকদের এসেট এই ভাবেই ডিল করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিভিল ফোরফিচার আইনের অধীনে ক্রিমিনালে উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত সম্পদ অথবা কোন একটি ক্রিমিনাল এক্টিভিটির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ সরকার বাজেয়াপ্ত করতে পারে।
আজকের আলোচনা এখানেই থামাচ্ছি।
বন্ধুদের অনুরোধ করবো, এই মেইলটি আপনার বন্ধুদের ফরওয়ার্ড করতে। আমি নিয়মিত লেখার চেষ্টা করছি। এখনো আমার সাবস্টাক মাত্র ১০০০ সাবস্ক্রিপ্সহান হয়েছে। আমার লক্ষ্য ১ লক্ষ সাবস্ক্রিপ্সনে পৌছানো। নইলে আমি এতো পরিশ্রমের কোন সার্থকতা পাই না।
দ্বিতীয় একটি বিষয়। আমার লেখায় বানান ভুল থাকবে। মোটাদাগে আরগুমেন্টটি যথেষ্ট পরিমান রিসার্চের ভিত্তিতে করা হলেও, অল্প কিছু তথ্যগত ত্রুটি থাকবে। এর কারন আমি অনেক বড় পরিমান এবং বড় স্কপের আরগুমেন্ট তৈরি করি, আমি যদি ১০০% পারফেক্ট করতে চাই তবে, আমার আরগুমেন্ট কমে আসবে।
এই ত্রুটিটা মেনে নিয়েই আপনাকে আমার লেখা পড়তে হবে।
ভালো প্রস্তাব, কিন্তু বাংলাদেশে ভালো ব্যাংক আছে কয়টা? ম্যারেজ হতে হলে তো কাছাকাছি সংখ্যার পার্টনারও লাগবে।
আপনার গবেষণা বাংলাদেশের তরুন অর্থনীতিবিদদের অনুপ্রেরণা হোক।এই প্রত্যাশা করি....ভালোবাসা অবিরাম শ্রদ্ধ্বেয় লেখক ❤️❤️